Thursday, September 19, 2013

"এডওয়ার্ড সাঈদ ও শাহ আব্দুল হান্নানের কলমে বুদ্ধিজীবী ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়”



 "এডওয়ার্ড সাঈদ ও শাহ আব্দুল হান্নানের কলমে বুদ্ধিজীবী ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়:” (পর্ব-১)



(উৎস্বর্গ করা হলো অস্তগামি, উদিত ও উদীয়মান মানবতাবোধে উজ্জীবীত ইসলামের অনুসরণ-প্রয়াসী সমাজ-চিন্তক শাহ আব্দুল হান্নান, শাহ আব্দুল হালিম, ড. মাইমুল আহসান খান (ঢাবি), মো. মোজাম্মেল হক (চবি), এম এন হাসান, মো. ফখরুল ইসলাম (পিইউ), মো. শহিদুল হক, লোকমান বিন ইউসুপ, নাজমুসসাকিব নির্ঝর ও অন্যান্য সকল তরুণ সমাজ-চিন্তকদের.....)

‘বুদ্ধিজীবী’ (ইন্টেলেকচুয়াল) ও ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ (ইন্টেলিজেন্সিয়া) শব্দ দুইটি সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যতটাই প্রয়োজনীয় ঠিক ততোটাই বিতর্কিত । একদিকে ‘বুদ্ধিজীবী’ ও ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ এর যেমন চাহিদার শেষ নেই, তেমনি এদের জীবনে লাঞ্জনা, গঞ্জনা ও অপমানেরও যেন শেষ নেই । আবার ‘বুদ্ধিজীবী’ হিসেবে গড়ে উঠতে ঠিক যতোটা কষ্ট, যতোটা কষ্ট ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ এর অঙ্গীভূত হতে, ঠিক তেমনি ততোটাই আনন্দ ‘বুদ্ধিজীবী’ হিসেবে গড়ে উঠতে পারলে কিংবা ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ এর অঙ্গীভূত হওয়ার স্বীকৃতি পেলে কিংবা সাধনায় সিদ্ধিলাভের মাধ্যমে মানবসেবার কোন কাজ করতে পারলে ।
মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগে ক্রমাগত উন্নয়নের আকাঙ্কার যতদিন পরিসমাপ্তি না ঘটবে ততদিন প্রয়োজন থাকবে জ্ঞান-গবেষনার । আর সঙ্গত কারণেই, প্রয়োজন ফুরোবেনা জ্ঞান-গবেষনার কারিগর এই ‘বুদ্ধিজীবী’ ও ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ এর । ‘বুদ্ধিজীবী’ ও ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ কে নিয়ে আলোচনা তাই যেমনি চিরন্তন তেমনি সর্বব্যাপী । পঞ্জিকার বিবর্তনের ধারায়, সেই কারনেই, অসংখ্য আলোচনা এই ‘বুদ্ধিজীবী’ ও ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ কে নিয়ে । অন্যান্য অনেকের মধ্যে এই আলোচনায় নাম লিখিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা দার্শনিক, বুদ্ধিজীবী ও ইংরেজী সাহিত্যের সেরা অধ্যাপক এডওয়ার্ড ডব্লিউ সাঈদ এবং বাংলাদেশের একমাত্র ব্যুরোক্রাট কাম ইসলামি চিন্তাবিদ, যিনি তাঁর জীবনের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছেন ইসলাম ধর্মের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ, অনুধাবন ও পরিপালনের মাধ্যমে মানবতার সেবায়, শাহ আব্দুল হান্নান । এদের মধ্যে এডওয়ার্ড ডব্লিউ সাঈদ লিখেছেন ‘বুদ্ধিজীবী’র পরিচয়, ব্যাপ্তি ও কাজ নিয়ে আর শাহ আব্দুল হান্নান লিখেছেন কিভাবে ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ (ইন্টেলিজেন্সিয়া) গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে । ‘বুদ্ধিজীবী’ নিয়ে সাঈদের বিখ্যাত গ্রন্থ হচ্ছে ‘Representations of the Intellectuals’ যা মূলত তার রিথ বক্তৃতামালার পরিবর্ধন আর ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ (ইন্টেলিজেন্সিয়া) গড়ে তোলা নিয়ে শাহ আব্দুল হান্নান লিখেছেন “Preparing Young Intellectuals” শিরোনামে চমৎকার একটি আর্টিকেল। গত পঞ্চাশ বছর ধরে শাহ আব্দুল হান্নান ইসলামে নারীর অধিকার, দুস্থ ও বঞ্চিতদের অধিকার, ইসলামি ব্যাংকিং ও ইন্সুরেন্স ইত্যাদি বিষয়ে মুসলিম কমিউনিটিতে যে বন্ধ্যাত্ব তা দূর করতে বিরামহীনভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ও সামাজিক-সাংগঠনিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন । সাঈদের বই এবং শাহ আব্দুল হান্নান এর আর্টিকেল এর বাংলা অনুবাদ অবলম্বনেই বাক্যবদ্ধ করা হয়েছে এই আর্টিকেল “বুদ্ধিজীবী ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়”

সাঈদের “Representations of the Intellectuals” এর আলোকে বুদ্ধিজীবী

এর্ডওয়ার্ড সাঈদ তার রিথ বক্তৃতামালায় ১৯৯৩ সালে যে বক্তব্য দেন তাই পরবর্তীতে ‘Representations of the Intellectuals’ শিরোনামে গ্রন্থবদ্ধ হয়। তাঁর এই বইয়ে তিনি বুদ্ধিজীবীর আদ্যপান্ত বর্ণনা করেছেন । বুদ্ধিজীবী কে? তাঁর উদ্দেশ্যে, দায়িত্ব এবং তার ব্যপ্তি ও আদলটি আসলে কেমন? রিথ বক্তৃতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি ইতিহাস, সাহিত্য আর সভ্যতার পরম্পরায় সে সব প্রশ্নের উত্তর খুজেঁছেন।

বুদ্ধিজীবীর পরিচয়:

বুদ্ধিজীবীর পরিচয় দিতে গিয়ে এর্ডওয়ার্ড সাঈদ তার বইয়ে বিভিন্ন বুদ্ধিজীবীদের উদ্ধৃতি উদ্ধৃত করেছেন। তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন বুদ্ধিজীবী সম্পর্কে বিপরীত মত ব্যক্তকারি বুদ্ধিজীবী এন্টনিও গ্রামসি ও জুলিয়ন বেন্দার প্রতি।

বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা দিতে ইটালীয় মার্কসবাদী দার্শনিক এন্টনিও গ্রামসি তার Prison Notebooks- এ উল্লেখ করেন:“যিনি জ্ঞান চর্চা করেন তিনি বুদ্ধিজীবী। তিনি আরো বলেন, সব মানুষই বুদ্ধিজীবী কিন্তু সমাজে সবাই বুদ্ধিজীবীর কাজ করেনা। বুদ্ধিজীবী হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি জাতীয়তাবাদ ও কর্পোরেট বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন।”

অন্যদিকে জুলিয়ান বেন্দাও বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা প্রদান করেন এবং তিনি এন্টনিও গ্রামসির বিপরীত মত প্রকাশ করেন তিনি “বুদ্ধিজীবীদের বিশ্বাসঘাতকতা” নামক বইয়ে বলেন, “বুদ্ধিজীবীরা হচ্ছে দার্শনিক রাজাদের একটি ক্ষুদ্র দল-যারা মানবজাতির বিবেককে নিয়ন্ত্রন করে।” যে সব বুদ্ধিজীবী বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের পদ্ধতিগত বিশ্লেষনের চেয়ে নীতির সাথে আপোষ করেন- তিনি তাদের সমালোচনা করেছেন। তিনি প্রকৃত বুদ্ধিজীবীদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, “প্রকৃত বুদ্ধিজীবী খুব দুর্লভ এবং এরা সে সব বিষয় গুলো উম্মেচন করেন- যেগুলো চিরন্তন সত্য ও ন্যায় বিচারের মানদন্ড।”

আমেরিকান সমাজ-বিজ্ঞানী আলভিন গোন্ডনার বলেন, “বুদ্ধিজীবীরা এমন যারা গনসমাবেশে বক্তৃতা দেয়না। এর পরিবর্তে তারাসভ্কটপূর্ন আলোচনার সদস্য হন। প্রত্যেক বুদ্ধিজীবীই বইয়ের সম্পাদক, লেখক, সাময়িক কৌশলবিদ ও আইনজীবী ।”

সাঈদ বলেন “বুদ্ধিজীবী হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি সমাজে সুনির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করেন। তার কাজকে মোটেও অবয়বহীন পেশাজীবী একটি দক্ষ শ্রেণীর সদস্য হিসাবে খাটো করা যাবেনা । তিনি আরো বলেন, “বুদ্ধিজীবী হচ্ছেন এমন এজন ব্যক্তি যিনি জনগণের প্রতি ও জনগণের জন্য সোচ্চার এবং মতামত, মনোভাব ও দর্শন তিনি উপস্থাপন ও গ্রন্থবদ্ধ করতে বদ্ধপরিকর। আর সেই ব্যক্তি ছাড়া এই ভূমিকা পালন করা সম্ভব নয়, যে ব্যক্তি লজ্জাজনক প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়াতে সক্ষম। এ সকল ব্যক্তি সরকারি কিংবা অন্য কোন কপোরেশনের সুবিধা বঞ্চিত হন। এদেরকে প্রচলিত বিশ্বাস ও সংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। প্রতিকুল পরিবেশ মোবাবিলা করার কারণে উদ্ভুত দু:খজনক ঘটনাগুলোকে একজন বুদ্ধিজীবীকে নিয়মিত ভুলে যেতে হয় এবং পায়েঁ দলে চলতে হয়।

বুদ্ধিজীবী হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যার সাধারণ জনগনের কাছে গ্রহযোগ্যতা আছে এবং যার নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য একান্ত নিজের উপর নির্ভর করতে হয়।

বুদ্ধিজীবীর প্রধান শর্ত হচ্ছে- সকল ধরনের ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের আনুগত্য থেকে আপেক্ষিক মুক্তিলাভ করা।

সর্বজনীন মুলনীতির উপর ভিত্তি করে একজন বুদ্ধিজীবী সবর্দাই উপরোক্ত কাজগুলো করে থাকেন । আর এ সর্বজনীন মূলনীতিটি হলো- বিশ্বের যে কোন শক্তি অথবা জাতির নিকট থেকে সকল জনগণর ন্যুনতম জীবনমান এর স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারের স্বীকৃতি। এবং ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবে এই অধিকারের লংঘনকে প্রশ্নের মুখোমুখি করা উচিত এবং এর বিরুদ্ধে সোৎসাহে লড়াই করা উচিত।

সাঈদ বলেন, বুদ্ধিজীবী এমন একজন চরিত্র- যে যে কোন বিষয়ে তার সুনির্দিষ্ট মতামত প্রকাশ করে এবং সকল বাধা উপেক্ষা করে জনগনের সামনে প্রকাশ্য বিবৃতি পেশ করে।

একজন বুদ্ধিজীবীর বিশেষ যোগ্যতা থাকে লিখা, শিক্ষাদান কিংবা টেলিভিশন সাক্ষাতকারসহ যে কোন যোগ্য উপস্থাপনার। কারণ এগুলোর মাধ্যমে জনগনের নিকট পৌঁছানোর যায় এবং এতে রয়েছে অনেক ঝুকিঁ, অঙ্গীকার,সাহসিকতা এবং দুর্দশার কারণ।

আমেরিকান সমাজ বিজ্ঞানী সি-রাইট মিলসের রেফারেন্স দিয়ে সাঈদ বলেন “বুদ্ধিজীবীরা গৎবাঁধা ধ্যান-ধারনার বিপক্ষে লড়াই করে এবং প্রকৃত ধ্যান-ধারনা বা দর্শনের মৃত্যুকে প্রতিরোধ করে । নিত্য নতুন বা প্রকৃত চিন্তার উপলদ্ধির জন্য দরকার-আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে নানবিধ চিন্তার যে প্রবাহ আমাদের সামনে উপস্থাপিত হচ্ছে তার অবিরাম বিশ্লেষণ, চিন্তা ও দৃষ্টির যে সীমাবদ্ধতা তার ভাঙন।”

রাজনীতির কারণে চিন্তা ও শিল্পের রাজ্য দ্রুতগতিতে সম্প্রারিত হচ্ছে। এই কারনে রাজনীতিতে বুদ্ধিবৃত্তিক সংহতি ও প্রচেষ্টাকে অবশ্যই কেন্দ্রীভূত করতে হবে ।

সাইদের মতে, বুদ্ধিজীবীরা হচ্ছেন সমকালীন রাজনীতির সাথে যুক্ত একটি চরিত্র যা দৃশ্যমান হয় তথ্য ও মিডিয়া শিল্পের মাধ্যমে । চরিত্র চিত্রন, অফিসিয়াল বর্নণা ও শক্তিশালী মিডিয়ার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ক্ষমতার সত্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মাধ্যমে বুদ্ধিজীবীরা তার প্রতিরোধ করতে পারে । শুধু প্রচার মাধ্যমেই নয় বরং প্রতিষ্ঠিত সমাজ-কাঠামো নিয়ন্ত্রণকারী সমস্ত চিন্তাধারাকে যথাযথ গ্রহনযোগ্য সীমার মাঝে রাখতে কিংবা এগুলোর মুখোশ উম্মোচনের ক্ষেত্রেও বুদ্ধিজীবীরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে সত্য কথা বলার চেষ্টা করেন। যদিও এ কাজগুলো সহজ নয়। যেমন- ভিয়েতনামে কিংবা উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রর স্বার্থকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সহজ ছিলনা। এই রুপ সময়ে বৃদ্ধিজীবীদের, আমি বিশ্বাস করি, কাজ হচ্ছে ভুলে যাওয়া বিষয়কে সামনে নিয়ে আসা। সকল অদৃশ্য বা লুকানো বিষয় কে দৃষ্টি সীমার মাঝে নিয়ে আসা, যুদ্ধ এড়ানোর মতো বিকল্প পন্থার নির্দেশ করা এবং মানব ধবংসের চিত্র তুলে ধরা । বুদ্ধিজীবীরা সর্বদাই একাকীত্ব এবং যুথবদ্ধতার মাঝামাঝি অবস্থান করে।

বুদ্ধিজীবীরা সবসময় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং তাদের আবাস, দুর্বল সংস্কৃতি ও জাতীসমূহের পক্ষাবলম্বন করে। তারা প্রতিনিধিত্বহীনদের প্রতিনিধিত্ব করে।

বুদ্দিজীবী এমন একজন ব্যক্তি যার পুরো অস্তিত্ব একটি “সমালোচনা মুলক দৃষ্টিভঙ্গির” উপর নির্মিত । তিনি প্রচলিত ও গতানুগতিক চিন্তা, সহজ সূত্র এবং প্রচলিত ও শক্তিধরদের মসৃন ও ‘সবকিছুর সমাধান’ টাইপ নীতিবোধে ও কাজে আস্তা রাখেন না । তিনি শুধু নিস্ক্রিয় ভাবে এসব অসমর্থন করেন এমন নয় বরং সক্রিয়ভাবে ও প্রকাশ্যে তার মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশও করেন।

বুদ্ধিজীবীরা সব সময় সরকারের নীতির সমালোচনা করে- এমনটি নয়। বরং সব সময় সর্তকতার সাথে চিরন্তন বুদ্ধিবৃত্তিক ধারনা পোষন করে। ‘অর্ধ সত্য’ কিংবা ‘সর্বগৃহীত বিষয়কে’ বিনা প্রশ্নে একজন বুদ্ধিজীবী কখনো মেনে নেয়না ।

বুদ্ধিজীবীর শ্রেণী বিভাগ:

সাম্প্রতিক সময়ে বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে তিনটি ধারণা বেশ প্রচলিত:

প্রথমত: যারা গভীরভাবে ধারণা নির্মাণ, বই লেখা ও চিন্তার জীবনচক্র অনুধাবনের সাথে সম্পৃক্ত ।

দ্বিতীয়ত: এই ধারণাটি মার্কসবাদ থেকে উদ্ভূত। এখানে বুদ্ধিজীবী বলতে বিশেষ স্বীকৃত বদ্ধিগত ‘শ্রেণী’ যেমন: অধ্যাপক, বক্তা, শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী, সাংবাদিক ও এরুপ অন্যান্য পেশার লোকদের বুঝানো হয়।

তৃতীয়ত: সাংস্কৃতিক বুদ্ধিজীবী, যাদের শিল্প ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বেশ দক্ষতা রয়েছে, যা তাদের এক ধরনের ক্ষমতা প্রদান করে এবং এর ফলে তারা জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

সমাজে যারা বুদ্ধিজীবীর কাজ করেন এন্টনিও গ্রামসি তাদেরকে ২টি শ্রেণীতে বিভক্ত করেনঃ

প্রথমত: ঐতিহাসিগত বুদ্ধিজীবী। এদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক, ধর্মপ্রচারক এবং প্রশাসকরা। তার বংশ পরম্পরায় একই ধরনের কাজ করে যান।

দ্বিতীয়ত: জৈবিক বা অরগানিক বুদ্ধিজীবী । গ্রামসি তাদেরকে সরাসরি শ্রেণীর সাথে সম্পর্কিত বলে বর্ণনা করেন। জৈবিক বুদ্ধিজীবীরা সক্রিয়ভাবে সমাজের সাথে যুক্ত থেকে সর্বদা মানুষের মনের পরিবর্তন ও বাজার বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যান। গ্রামসির মতে আজকের যারা বিজ্ঞাপনী সংস্থা কিংবা জনসংযোগ কুশলী কোন ডিটারজেন্ট কিংবা এয়ারলাইন কোম্পানির জন্য কাজ করেন তিনিও জৈবিক বুদ্ধিজীবী হিসাবে বিবেচিত হবেন।

অন্যদিকে নোয়াম চমস্কি তিন ধারার বুদ্ধিজীবীর কথা বলেছেন:

প্রথমত: এলাকা বিশেষজ্ঞ, দ্বিতীয়ত: সমাজতাত্বিকগণ- যারা সামাজিক পরিবর্তন, উন্নয়ন, দ্বন্দ, এবং দ্বন্দ নিরসন কিংবা সমাজ- বিপ্লব নিয়ে কথা বলেন, তৃতীয়ত: মৌলিক মানবিক মূল্যবোধ বিষয়ে ধর্মতাত্বিক, দার্শনিক ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে জননীতিকে যারা বিষশ্লষণ করে।

বুদ্ধিজীবীর কাজ :

এডওয়ার্ড সাঈদ ইউলিসিস স্টিকেন এর বরাতে বলেন যে, বুদ্ধিজীবীর কর্মকান্ডের লক্ষ্য “মানুষের স্বাধীনতা ও জ্ঞানের অগ্রগতি সংঘটন করা। বুদ্ধিজীবীর প্রধান কাজ হলো প্রাসঙ্গিক বিষয়কে জনসম্মুখে নিয়ে আসা এবং স্পষ্ট করা; যে কোন জায়গায এবং যে কোন সময় অদৃশ্য (শোসকগোষ্ঠীর) শক্তির ক্ষমতার বলয়কে চ্যালেঞ্জ করা এবং পরাজিত করা।

বুদ্ধিজীবীদের কাজের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি কতিপয় বুদ্ধিজীবী যে মতামত প্রকাশ তা তুলে ধরেছেন । এন্টানিও গ্রা্মসি তার প্রিজন নোটবুকস-এ (prison Notebook)-এ লিখেন-

“বুদ্ধিজীবীরা হচ্ছেন আধুনিক সমাজের কার্যাবলীর কেন্দ্রীয় অংশ। পৃথিবীর সকল স্থানেই অনেক বুদ্ধিজীবীর উত্থান ঘটেছে । আধুনিক ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী ছাড়া কোন বড় ধরনের বিল্পব সংঘচিত হয়নি। আবার বুদ্ধিজীবী ছাড়া কোন বিল্পব বিরোধী আন্দোলনও সংঘটিত হয়নি । বুদ্ধিজীবীরা হছ্ছেন, বিল্পবের পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে. এমনকি ভাতিজা-ভাতিজী। এক কথায় তারা বিল্পবের প্রাণ ।

The Sentimental Education গ্রন্থে ফ্লেবার্ট হতাশা ব্যক্ত করেছেন এবং বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “বুদ্ধিজীবীর প্রকাশ ঘটে সরাসরি কাজের মধ্য দিয়ে । একজন বুদ্ধিজীবীর দুটি প্রয়োজনীয় কাজ করতে হয়। একটি হচ্ছে, ভাষা কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানা এবং অন্যটি হচ্ছে, কখন ভাষার উপর হস্তক্ষেপ করতে হবে সেটি ও জানা।”

জুলিয়ান বেন্দা বলেন, প্রকৃত বুদ্ধিজীবীরা কখনোই ন্যায় ও সত্যের অনাকাঙ্খিত নীতির দ্বারা প্ররোচিত হয়ে নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন না । তাঁরা দূর্নীতির নিন্দা জানায় । দুর্বলকে রক্ষা করে। অন্যায় ও শোষনমূলক শাসনের বিরোধীতা করেন । যেমন- কেনলন ও ম্যাসিলন চর্তুদশ লুইয়ের কতিপয় যুদ্ধের নিন্দা জানিয়েছিল। ভলতেয়ার প্যালাটিনেটের হত্যাকে ধিক্কার জানিয়েছিল। বাকলে ফরাসী বিল্পবেরে প্রতি ইংল্যান্ডের অসহনীয়তাকে নিন্দা জানিয়েছিল এবং ফরাসীদের প্রতি নাৎসী জার্মানীদের নিষ্ঠুর আক্রমনের প্রতিবাদ করেছেন আধুনিক যুগের বুদ্ধিজীবীরা ।

জুলিয়ান বেন্দা তার বইয়ে বুদ্ধিজীবীদের বর্তমান সমস্যা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “আজকের বুদ্ধিজীবীদের সমস্যা হচ্ছে “তারা তাদের নিজের কর্তৃত্বকে উপদলীয়তা, গণবোধ, জাতীয়তাবাদীতার ও শ্রেণী স্বার্থের মত গোষ্ঠী-উত্তেজক সংগঠনের কাছে আত্ম-সমর্পণ করেছে।” বেন্দা এই লিখা লিখেন ১৯৯৭ সালে । তিনি আরো লিখেছেন, “সরকারের পক্ষে কর্মচারি হিসাবে বুদ্ধিজীবী রাখা খুবই জরুরী । যে নেতৃত্ব দিতে পারবেনা কিন্তু সরকারের নীতিমালা প্রনয়নে সাহায্য করতে পারবে। সরকারি শত্রুদের সুভাষন ও ব্যাপক পরিসরে অরওয়েলিয়ান বক্তব্য সমৃদ্দ সামগ্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মিথ্যা-প্রচারকে রোধ করতে পারবে।”

বেন্দার মতে প্রকৃত বুদ্ধিজীবীরা সমাজ-বিচ্ছিন্নতা ও নিষ্ঠুরতার মধ্যেও ঝুঁকি নেবে । তাদেরকে আপোষহীন ব্যক্তি হতে হবে। তাদের ব্যক্তিত্ব হবে অতি উচ্চ। তিনি হবেন এখন একজন ব্যক্তি যিনি সত্য কথা বলতে পারেন। তিনি মূলত খিটখিটে, রাগীও সাহসী, যার নিকট পার্থিব কোন শক্তি এত বড় ও জোরালো বিষয় নয়- যা সমালোচনা করা যায়না এবং যাতে অভ্যস্ত হওয়া যায়না ।

সাঈদ বলেন, বুদ্ধিজীবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ন কাজ হলো- তথাকথিত চালচলন ও খন্ডিত বিষয়গুলোর সনাতনী দৃষ্টিভঙ্গী ভেঙ্গে ফেলা । কেননা এগুলো মানুষের চিন্তা-ভাবনা ও যোগাযোগের সামর্থ্যকে সীমিত করে ফেলে । বুদ্ধিজীবীদের আলাদা আলাদা দলীয় সংশ্লিষ্টতা, জাতীয় প্রেক্ষাপট এবং অন্যান্য আনুগত্য থাকবে; তবুও তার কাছে মানুষের দুর্দশা ও শোষন সম্পর্কে সত্যের মানদন্ড একই থাকবে।


''এডওয়ার্ড সাঈদ ও শাহ আব্দুল হান্নানের কলমে বুদ্ধিজীবী ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় (পর্ব-২)''



উৎস্বর্গ করা হলো অস্তগামি, উদিত ও উদীয়মান মানবতাবোধে উজ্জীবীত ইসলামের অনুসরণ-প্রয়াসী সমাজ-চিন্তক শাহ আব্দুল হান্নান, শাহ আব্দুল হালিম, ড. মাইমুল আহসান খান (ঢাবি), মো. মোজাম্মেল হক (চবি), এম এন হাসান, মো. ফখরুল ইসলাম (পিইউ), মো. শহিদুল হক, লোকমান বিন ইউসুপ, নাজমুসসাকিব নির্ঝর, টুডে ব্লগের ব্লগার দার্শনিক, রওশন জমির, ইবনে আহমাদ ও অন্যান্য সকল তরুণ সমাজ-চিন্তকদের.....)

তরুণ বুদ্ধিজীবীগোষ্ঠীর লালন ও বিকাশ (Preparing Young intellectuals)
-মূল (ইংরেজী) শাহ আব্দুল হান্নান
-অনুবাদ: ব্লগার রামির

“বুদ্ধিজীবী জম্ম দেওয়া যায়না: স্ব প্রচেষ্টায় ব্যক্তিকেই বুদ্ধিজীবী হিসেবে গড়ে উঠতে হয়।” কথাটি চরম সত্য। তথাপি আমার অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে -এ চরম সত্যটির কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। মেধাবী তরুণ / তরুণীদের সামান্য প্রচেষ্টায় বুদ্ধিজীবী হিসেবে গড়ে তোলা যায়।

১৯৮৯ সালের দিকে আমি অনুভব করলাম, গোটা মুসলিম বিশ্বেই, বিশেষ করে বাংলাদেশে, মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের অভাব প্রকট। তাই ঢাকাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ এবং প্রকৌশল বিদ্যার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে দুইটি ক্লাস চালু করলাম (তরুণ-তরুণীদের জন্য পৃথক পৃথক ক্লাস) ।

প্রাথমিকভাবে প্রত্যেক ক্লসে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ১০ (দশ) জন ।

আমি তাদের জন্য একটি কারিকুলাম তৈরী করেছিলাম। এতে অন্তর্ভূক্ত ছিল আকীদাহ (মোহাম্মদ-আল-গাজালীর বই এর ভিত্তিতে), উসুল আল-ফিকহ (ভিত্তি ছিল ড. হাসিম কামালী), ফিকহ (ভিত্তি ছিল ফিকহ শাস্ত্রের অন্যান্য বই), মুসলিম ইতিহাস, জেন্ডার ইস্যুজ (ভিত্তি ছিল জামাল আল-বাদাবির লেকচার সমগ্র) ও অন্যান্য বিষয় (রাজনৈতিক, সামাজিক অর্থনৈতিক, আন্তর্জাতিক সর্ম্পক, নৈতিকতা ইত্যাদি- যেগুলোর ভিত্তি ছিল হামুদাহ আব্দুল আতি, জামাল বাদাবি, ড. ইউসুফ আল-কারজাভি, সাঈয়েদ মওদুদী প্রভৃতি লেখকের বই সমূহ)।

আমি সিলেবাসের একটা একটা করে বই পড়ানো শুরু করতাম । আর এতে সময় লাগত বইভেদে ৩ মাস, ৬ মাস কিংবা ৯ মাস। আমি বই-এ আলোচিত বিষয়গুলো বিস্তারিত ব্যাখা করতাম । প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ও আলোচনায় আনতাম। একই বিষয়ে বিভিন্ন লেখকের মতামত তুলে ধরতাম, সেগুলোর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ব্যাখা করতাম। আমি তাদেরকে শিক্ষা দিতাম ড. কারজাভীর বই Islamic Awakening between Rejection & Extremism, Priorities of the Islamic Movement in the Coming Phase, Halal-wal-Haram Fil Islam, The Status of Women, সাইয়েদ মওদুদীর Khalifat-wa-mulukat, Rasail-wa-masail (ছয় খন্ড), হাসিম কামালীর Usul & The Freedom of Expression, ড.ইসমাঈল রাজী আল-ফারুকীর Tauhid (এতে সময় লেগেছিল এক বছর), ড. আব্দুল হামিদ আবু সুলাইমানের The crisis of Muslim Mind, International Relations, ড. তারিক রামাযানের কিছু বই, ড. উমর চাপরার অর্থনীতি সংক্রান্ত বই, এবং সাঈদ আবুল হাসান আল-নাদভীর কিছু বই।

আমি তাদেরকে সমসাময়িক বিভিন্ন তাফসীর পড়তে বলতাম; যেমন- সাইয়েদ কুতুব, আসাদ, মওদুদী। যে অংশটুকু বুঝতে সমস্যা হতো শুধুমাত্র সেই অংশটুকু আমি ব্যাখা করতাম। একইভাবে আমি তাদেরকে ব্যাখ্যাত বুখারি ও মুসলিম শরিফ পড়াতাম। আমি উসুল আল-হাদিসের কিছু বিষয় তাদের নিকট ব্যাখ্যা করতাম এবং সমসাময়িক অন্যান্য বিষয়ে কিছু ধারণা সুস্পষ্ট করতাম।

স্টাডি ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রী সিলেকশনের ক্ষেত্রে মেধাবী ও অনার্স লেভেলের ছাত্র-ছাত্রীদের সিলেক্ট করতাম। প্রতি ক্লাসে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা থাকত অনুর্ধ্ব ১২ (বার) জন এবং অন্যুন ৫ (পাঁচ) জন। এর বেশী বা কম হলে ক্লাসে মনোযোগ দেওয়া কঠিন ।

এ জাতীয় ক্লাস কমপক্ষে ৫ বছর চালু থাকা উচিত । এটা হতে পারে সাপ্তাহিক কিংবা পাক্ষিকভিত্তিতে। সেক্ষেত্রে শিক্ষককে হতে হবে গভীর জ্ঞানের। আলোচক বা শিক্ষককে হতে হবে ক্লাশে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীর বন্ধু। তাকে হতে হবে খুবই আন্তরিক, সহানুভূতিশীল, সদালাপি ও মৌলিক মানবীয় গুনাবলীসম্পন্ন। অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীর যে কোন সমস্যা (এমনকি ব্যক্তিগতও) সমাধানে আলোচকের নিকট ছাত্র-ছাত্রীদের নিষ্কন্টক প্রবেশাধিকার থাকতে হবে। ক্লাসটি হতে পারে সংশ্লিষ্ট আলোচকের বাসায় অথবা তার প্রতিষ্ঠানে। এমন সময় ক্লাসটি হওয়া উচিত, যেন সে সময় আলোচকের অন্য কোন ব্যস্ততা না থাকে এবং তিনি পূর্ণ মনোযোগ সহকারে আলোচনায় অংশগ্রহন করতে পারেন।

আলোচক / শিক্ষককে হতে হবে সর্ব-প্রকার ঝোঁক-মুক্ত। প্রতিটি ক্লাসের ডিউরেশন হওয়া উচিত কমপক্ষে ২ ঘন্টা। সেশনগুলো হওয়া উচিত খোলা-প্রশ্নোত্তর টাইপের। সেখানে আলোচিত হবে পূর্ব-নির্ধারিত নির্দিষ্ট বই, আদর্শিক বিষয়, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিসহ অংশগ্রহণকারীদের উত্থাপিত যে কোন বিষয়। যে কোন মৌলিক বিষয় তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনার সুযোগ থাকতে হবে । আলোচকের উচিত সকল প্রশ্নের উত্তরদানের চেষ্ঠা করা। কোন বিষয়ে সময়ের প্রয়োজন হলে তিনি সময় নেবেন এবং পরবর্তী ক্লাসে উত্তরদানের চেষ্টা করবেন । (একজন স্কলারের পক্ষে সাধারণত এ ধরনের ক্লাস জীবনে ২/৩ বার নেয়ার সুযোগ হয়ে থাকে)।

গত ১৭ বছরে আমি প্রায় ১০০ ছাত্র / ছাত্রীকে শিক্ষা দিয়েছি। তাদের প্রতি ১০ (দশ) জনের ০১ (একজন) কমপক্ষে মানসম্পন্ন বুদ্ধিজীবী (সিনিয়র বুদ্ধিজীবী) হিসেবে গড়ে উঠবে । আমার বিশ্বাস, ক্লাসের ছাত্রদের মাঝ হতে কমপক্ষে ২৫ জন বৃদ্ধিজীবী হিসাবে গড়ে উঠবে । তাদের কেউ হবে উঁচু মানের, কেউবা মাঝারি মানের । বাংলাদেশের বাইরে অস্ট্রেলেশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানী, জাপান, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে এদের অনেকেই বর্তমানে লোকাল কমিউনিটির লিডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে । তারা উদার মনের, ভারসান্যপূর্ণ চিন্তার অধিকারী এবং দৃষ্টিভঙ্গীর দিক থেকে খুবই বাস্তববাদী এবং প্রায়োগিক।

যে কোন ইসলাম-পন্থী মুসলিম ব্যক্তিত্ব বৃদ্ধিজীবী লালন ও বিকাশের এই কাজটি শুরু করতে পারেন। এছাড়াও বাস্তবতা ও প্রয়োজনের আলোকে প্রক্রিয়াটির পদ্ধতিগত এবং মানগত উৎকর্ষ সাধনও করতে পারেন ।
সমাপ্ত